
নারায়ণগঞ্জের তিন সাংবাদিকের উপর হামলা করেছে বিএনপি’র কথিত নেতা
হারুন অর রশিদ সাগর নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রতিনিধি:-
বুধবার ৫ নভেম্বর বিকালে নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লার গিরিধারা বউবাজার এলাকায় সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে একটি অনলাইন পোর্টালের তিন সংবাদকর্মী আটকে মারধর করার অভিযোগ উঠেছে। 
এসময় হামলা চালিয়ে ক্যামেরা ও মুঠোফোন ভাঙচুর করা হয়েছে। খবর পেয়ে পুলিশ ও স্থানীয় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের তিনজনকে উদ্ধার করে শহরের খানপুরে অবস্থিত ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট নারায়ণগঞ্জ হাসপাতালে চিকিৎসা দিয়েছে। এ ঘটনায় অভিযুক্ত কথিত বিএনপি নেতা ও সরকারী তোলারাম কলেজ ছাত্রদল শাখার সভাপতি আতা-ই রাব্বির বাবা শাহাদাৎ হোসেন (৬০) কে আটক করেছে ফতুল্লা থানা পুলিশ। তবে আটক করে থালায় নিয়ে আসলেও থানার জেল হাজতে না ঢুকিয়ে জামাই আদরের চেয়ারে বসিয়ে রাখার অভিযোগ উঠেছে পরবর্তীতে সাংবাদিকদের মুখে থানার জেলে ঢোকানো হয়।
হামলায় আহতেরা হলেন অনলাইন পোর্টাল জাগো নিউজের সিদ্ধিরগঞ্জ থানা প্রতিনিধি মো. আকাশ(২৭), নিউজ নারায়ণগঞ্জ এর ক্যামেরাম্যান আব্দুল্লাহ মামুন (৩২) ও আয়াজ রেজা আরজু (২৮)।
জাগো নিউজের সাংবাদিক মো. আকাশ সাংবাদিকদের জানান, সদর উপজেলার ফতুল্লার গিরিধারা বউবাজার এলাকায় এক নারীর অভিযোগ ছিল তাদের জমি দখল করে রেখেছিল বিএনপির নামধারী নেতা শাহাদাত ও তার ছেলে আতাই-রাব্বি। ওই নারীর বাসার গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়া হয়েছে। তিনদিন যাবত কারখানায় আটকে রেখে খাওয়া ধাওয়া বন্ধ করে রেখেছিলো। একই সাথে তার মেয়ের শ্লীলতাহানী ও মারধর করা হয়েছে। ওই ঘটনায় ভুক্তভোগী নারী পুলিশ ও সেনাবাহিনী সহ বিভিন্ন জায়গায় অভিযোগ করে সুরাহা পাচ্ছিলেন না। ওই নারী ফতুল্লা থানায় একাধিকবার জিডি করেন। এ বিষয়ে খোঁজ খবর ও সংবাদ সংগ্রহ করতে বুধবার বিকেল ৪টার দিকে আমরা ঘটনাস্থলে যাই। সেখানে ভুক্তভোগী ওই নারীর সঙ্গে কথা বলার সময় কথিত বিএনপি নেতা শাহাদাত হোসেন ও তার পরিবারের লোকজন সহ অপর এক সহযোগী ভুমি দালাল সহিদ মিয়া লোকজন নিয়ে এসে অতর্কিতভাবে তাদের ওপর হামলা চালায়। হামলাকালে তিনি ও নিউজ নারায়ণগঞ্জ এর ক্যামেরাম্যান আব্দুল্লাহ্ মামুন ও আয়াজ রেজা আরজু কে বেধড়ক মারধর করে। এক পর্যায়ে তাদেরকে টেনে হেচড়ে একটি রুমে আটকে রেখে লাঠিসোটা ও রড দিয়ে পিটিয়ে রক্তাক্ত জখম করে। তাদের সঙ্গে থাকা ক্যামেরা ও মুঠোফোন ভেঙে ফেলে। পরে রুমে আটকে মুঠোফোন ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে গণমাধ্যমকর্মীরা ঘটনাস্থলে ছুটে গেলে তাদের সঙ্গেও অশোভন আচরণ করা হয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনজনকে উদ্ধার করে শহরের খানপুরে অবস্থিত ৩০০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়েছে।
‘ওই সময়ে শাহাদাত এও বলেন আমরা বিএনপি করি তোমাদের মেরে ফেলবো। আমাদের কেউ আটকাতে পারবে না। আমার ছেলেও ছাত্রদল করে’ বলে জানান আকাশ।
আরো জানান কথিত বিএনপি’র নেতা শাহাদাত এলাকায় নিজেকে পুলিশ শাহাদাত বলে সকলকে পরিচিত দিয়েছেন এবং লোকদেরকে সবসময় চাপের মুখে রাখতেন।
ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে ফতুল্লা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আনোয়ার হোসেন বলেন, অভিযুক্ত শাহাদাৎ হোসেনকে আটক করা হয়েছে। এই ঘটনায় এখন রাত ১০.৩০ নিউজ লেখা পর্যন্ত মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।